নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি,দৈনিক প্রতিদিনের বার্তা: নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলায় সাম্প্রতিককালে মেঘনার ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায় শতাধিক মানুষের বসত বাড়ী, শত শত একর ফসলী জমি ও গাছ পালা। আর এতে অসহায় ও সহায়সম্বলহীন এবং গৃহহীন হয়ে পরে বহু মানুষ। বিগত ৩০ বছর যাবত মেঘনা নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের সাধারন মানুষগুলো।
গত বুধবার (২২জুলাই) মেঘনার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা সরজমিনে পরিদর্শন করেন রায়পুরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযুদ্ধা আব্দুস সাদেক, রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম, উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা মো. আমিনুর রশিদ। পরিদর্শনকালে তাঁদের সাথে ছিলেন নরসিংদী জেলা পরিষদ সদস্য ও শ্রীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মোতালিব, শ্রীনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক রিয়াজ মুর্শেদ খান রাসেল, চাঁনপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোমেন সরকার, বিভিন্ন ওয়ার্ডের মেম্বারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামগুলো পরিদর্শন শেষে আন্তরিকভাবে দুঃখ ও সহমর্মিতা প্রকাশ করে উপজেলা চেয়ারম্যান জনাব আব্দুস সাদেক বলেন, সত্যিকার অর্থে এটা অত্যন্ত কষ্টের এবং বেদনাদায়ক। নদী ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাওয়া মানুষগুলোর জন্য আমি কিছু করতে চাই। আমি উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এবং উপজেলা রাজস্ব তহবিল থেকে তাদেরকে খুব দ্রুত আর্থিকভাবে যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করব।
তিনি আরো বলেন, চরাঞ্চলের নদী ভাঙনের ব্যাপারে আমাদের রায়পুরার উন্নয়নের রুপকার, সাবেক মন্ত্রী, মাননীয় সাংসদ জনাব রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপি মহোদয়ের সাথে কথা হয়েছে। তিনি আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন নদী ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এবং আমরা উপজেলা প্রশাসনও যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা হাতে এলে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে আর্থিক সহযোগীতা করা হবে এবং ভূমিহীন ও গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষদের জন্য খাস জমিতে তাদেরকে পূর্ণবাসনের ব্যবস্থা করতে ডিসি মহোদয়ের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা করবো।
তিনি আরো বলেন, চরমধুয়া ও চাঁনপুর ইউনিয়নে বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব একনেকে পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে এটি বাস্তবায়ন হয়ে যাবে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত একাধিক লোকজন জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর যাবত মেঘনা নদীর ভাঙনের হাত থেকে স্থায়ীভাবে রক্ষা পেতে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জোড় দাবী করে আসছে চাঁনপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর, ইমামদীরকান্দি ও সওদাগরকান্দি, শ্রীনগর ইউনিয়নের পলাশতলী, চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের বাটখলা ও চরমধুয়া ইউনিয়নের চরমধুয়া ও বীর চরমধুয়া গ্রামের হাজার হাজার মানুষ। সময়ের পরিক্রমায় সরকার গঠনে বিভিন্ন দলের পরিবর্তন হলেও, চরাঞ্চলবাসীর ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই চরম আতঙ্কে ও উৎকন্ঠায় কাটে চরাঞ্চলবাসীর দিনকাল। আর এ থেকে উদ্ধার হওয়ার একমাত্র উপায় স্থায়ীভাবে বেড়িবাঁধ নির্মাণ, যা চরাঞ্চলবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী।
Leave a Reply